Header Ads

Header ADS

কেরাত কি আস্তে না জোরে ??







১ম দলিল

হযরত ওয়াইল বিন হুজর (রা) ইয়ামান বাসী সাহাবি ছিলেন। তিনি নবীজি (সা) এর দরবারে দ্বীন শিক্ষা করার জন্যই এসেছিলেন। তিনি ২০ দিন নবিজি () এর সহবতে ছিলেন এবং ৬০ ওয়াক্ত জোরে কিরআত ওয়ালা নামাজ পড়েছিলেন। রাসুল () নিজের ঠিক পিছনে তার জন্য জায়গা নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন ওয়াইল বিন হুজর (রা) বলেন এই ৬০ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে মাত্র  ওয়াক্ত নামাজে রাসুল (সা) জোরে আমিন ” বলেছিলেন ( আর ৫৭ ওয়াক্ত নামাজে আমিন” আস্তে বলেছিলেন)  তো আমার বুজতে বাকি ছিল না যে রাসুল (সা) আমাকে শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যেই এমনটি করেছিলেন।
[
আল আসমাউ ওয়ালকুনা : /১৯৭মাজমাউজ যাওয়াইদ : /১১৩ নাসাঈ হা নং- ৯৩২শরহুল মাওয়াহিব : /১১৩ শরহে বুখারী দূলাবী প্রনীত]
.
উক্ত হাদীস দ্বারা সুস্পষ্ট ভাষায় প্রমানিত হল- নবীজি সা. সাহাবায়ে কেরামকে শুধু মাত্র শিক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যে কখনো কখনো আমীন জোরে বলতেন অন্যাথায় সর্বদা আমীন আস্তে বলতেন।
:
:

২য় নাম্বার দলিল

:
ওয়াইল (রা) থেকে লাউস সুনানে বর্ণিত একদা রাসূল সা. যখন নামায থেকে অবসর হলেন তখন তাঁর চেহারা মোবারকের ডানপাশ  বামপাশ দেখেছি। রাসূল সা. গাইরিল মাগযুবি আলাইহিম ওয়ালায যাল্লীন’’ পড়েছেন তখন আমীনকে টেনে একটু আওয়াজ করে পড়েছেন। আমি ধারণা করছি এই আওয়াজটা তিনি আমাদেরকে শিক্ষা দেয়ার উদ্দেশ্যে করেছেন।
[
লাউস সুনান :পৃ: ২৫২আল আসমা ওয়াল কুনা ‘ ১ম খন্ড১৯৭ প্রিষ্ঠা] উক্ত হাদীছটি হাকেম ছহীহ বলেছেন।
.
উক্ত হাদীস দ্বারা সুস্পষ্ট ভাষায় প্রমানিত হল- নবীজি সা. সাহাবায়ে কেরামকে শুধু মাত্র শিক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যে কখনো কখনো আমীন জোরে বলতেন অন্যাথায় সর্বদা আমীন আস্তে বলতেন।
:

৩য় নাম্বার দলিল

:
নাসাঈ শরীফের রেওয়ায়েতে হযরত ওয়াইল (রা) বলেন – রাসুল ( ) সুরা ফাতিহা শেষ করলেন তখন আমীন বললেন। আমি যেহেতু উনার ঠিক পিছনেই ছিলাম তাই আমি শুনতে পেলাম। [নাসাঈ ৯৩২]
.
উক্ত হাদীস দ্বারা সুস্পষ্ট ভাষায় প্রমানিত হল- নবীজি সা. সাহাবায়ে কেরামকে শুধু মাত্র শিক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যে কখনো কখনো আমীন জোরে বলতেন অন্যাথায় সর্বদা আমীন আস্তে বলতেন।
:
:

চতুর্থ নাম্বার দলিল

:
উপরিউক্ত আমিন জোরে বলার হাদিসটি সুফিয়ান ছাউরি (রহ) থেকে বর্নিত। চলুন দেখে নিই উনার কি আমল ছিল।
//সুফিয়ান ছাওরি রহ নিজেও আমিন নিঃশব্দে পড়তেন। [আল মুহাল্লা লি ইবনে হাযম২য় খন্ড২৯৫ প্রিষ্ঠা]
//ইবনে মুনযির আল আওসাত গ্রন্থে বলেছেন-
সুফিয়ান সাওরি রহ বলেন তুমি যখন সুরা ফাতিহা সমাপ্ত করবে তখন
নিঃশব্দে আমীন বলবে। [আল আওসাত ৩য় খন্ড২৯৫ প্রিষ্ঠা]
:
:

৫ম নাম্বার দলিল

:
ওয়ায়েল ইবনে হুজরাত রা. বলেন-
রাসূল সা. আমাদেরকে নামায পড়ালেন।নামাযে
ﻏَﻴْﺮِ ﺍﻟْﻤَﻐْﻀُﻮﺏِ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻢْ ﻭَﻟَﺎ ﺍﻟﻀَّﺎﻟِّﻴﻦَ ‏
বলার পর আমীন বললেন।এ সময় আওয়াজ নীচু করেছিলেন।
[
মুসনাদে আহমদ-/৩১৬,
মুসতাদরাকে হাকেম-/২৩২,
তিরমিযী -/৫৮,
দারাকুতনি /৩৩৪,
সুনানে বাইহাকি- /৫৭]
.
এই হাদিসকে হাকেম (রহ) সহীহ বলেছেন। যাহাবী (রহ) তার সংগে একমত হয়েছেন। ইবনে জারীর তাবারী (রহ) এটিকে সহিহ বলেছেন। কাযী ইয়ায (রহ) এটিকে সহিহ বলেছেন।
[
শারহুল উব্বী- / ৬০৮]
:
:
৬ষ্ট নাম্বার দলিল

:
হযরত আবু হুরাইরা রা. থেকে ছহীহ সনদে বর্ণিতরাসূল কারীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনইমাম যখন গাইরিল মাগযুবি আলাইহিম ওয়া লায যাল্লীন বলেন তখন তোমরা আমীন বল। কেননাতখন ফেরেশতাগণ আমীন বলেন এবং ইমামও আমীন বলেন। যাদের আমীন ফেরেশতাদের আমীনের সাথে মিলে যাবে তাদের পূর্বের গুনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হবে
হাদীছটি ছহীহ সনদে রেওয়ায়ত করেছেন ইমাম আহমদ,ইমাম নাসাঈ  দারমী রহ.প্রমুখ। তদ্রƒ রেওয়ায়ত করেছেন ইবনে হিব্বান তাঁর ছহীহ হাদীছের কিতাবে
হাওয়ালা: সহীহ মুমসলিম- /১৭৬,সহীহ বুখারী-/১০৮,সুনানে আবু দাউদ-/১৩৫আছারুস সুনান-/১৯১যাইলেয়ী-/১৯৪লাউস সুনা-/২৪৬]
.
নোট:
ফিরিশতাদের আমিন আস্তেই হয়।আজ পর্যন্ত কেউ ফেরশতারদের আমীন ধ্বনি শোনেনি।তাদের আমীনের সাথে মিল তো তখন হবে যদি সময় এক হয় এবং আওয়াযও আস্তে হয়।
:
:

৭ম নাম্বার দলিল

আবু ওয়ায়েল বলেন- আলী রা. এবং ইবনে মাসউদ রা. () ﺑِﺴْﻢِ ﺍﻟﻠَّﻪِ()اعوذبالله
(
) آمين -উঁচু আওয়াজে বলতেন না।
[
মুজাম তাবারানী /২৬৩]
:
:

৮ম নাম্বার দলিল

ওমার রা. বলেন ইমাম চার জিনিস আস্তে বলবে- () ﺑِﺴْﻢِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ()اعوذبالله
(
) آمين () اللهم ربّنالك الحمد
[
কানযুল উম্মাহ /২৭৪বেনায়া /৬২০মুল্লাহ ইবনে হজম /২০৯]
:
:

 নাম্বার দলিল

ইব্রাহীম নাখয়ী তাবেয়ী রহ. এর ফতওয়া হলো- পাঁচটি জিনিস আস্তে বলা হবে, () ﺑِﺴْﻢِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ()اعوذبالله
(
) آمين () اللهم ربّنالك الحمد () سبحان الله
[
মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক /৮৭মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা /৫৩৬]
:
:
১০ নাম্বার দলিল

জলীলুল কদর তাবে হাসান বসরী রহ. থেকে হাদীছ বর্ণিত আছে, ‘‘একদা সামুরা বিন জুনদুব এবং ইমরান বিন হোসাইন রা. এর মধ্যে একটি হাদীছ আলোচনা হয়। তা হলোসামুরা বিন জুনদুব রা. বলেছেনতিনি রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামায থেকে দুটি সেকতা’ তথা চুপ থাকা সংরক্ষণ করেছেনপ্রথম তাকবীরের পর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম কিছুক্ষণ চুপ থাকতেন। আর যখন গাইরিল মাগযুবি আলাইহিম ওয়ালায যাল্লীন পড়তেন তখন কিছুক্ষণ চুপ থাকতেন। ইহা বলার পর ইমরান বিন হোসাইন তাঁর কথাটি গ্রহণ করতে আপত্তি জানিয়েছেন। অতঃপর উভয়জন মিলে জলীলুল কদর ছাহাবী উবাই বিন কাআব রা. এর নিকট ব্যাপারটি লিখে পাঠালেন। প্রতিউত্তরে উবাই বিন কাআব রা. লিখেছেনসামুরা বিন জুনদুব রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামায থেকে চুপ থাকাবিষয়ক যা সংরক্ষণ করেছেন সেটাই হক  সত্য।
.
সাঈদ বলেনআমরা কাতাদা (রহ) কে জিজ্ঞাসা করলাম দুটি সাকতা কোথায় ছিলতিনি বল্লেন রাসুল (সা) যখন কিরয়াত পাঠ আরম্ভ করতেন এবং যখন কিরয়াত পাঠ সমাপ্ত করতেন। এর পর কাতাদা বলেছেনযখন ওয়ালায যোয়াল্লিন পাঠ শেষ করতেন। তিনি আরো বলেছেন রাসুল (সা) এর পছন্দ ছিল যখন কিরাত পাঠ সমাপ্ত করতেন তখন শ্বাস স্বাভাবিক হওয়ার আগ পর্যন্ত নিরব থাকতেন।
[ (
লাউস সুনান:,পৃ:২৪৮) ] + [তিরমিযি( ২৫১) আবু দাউদ (৭৮০);মুসনাদে আহমাদ ( খন্ডপ্রিষ্ঠা ২৩)]
.
ইমাম আবুদাউদসহ অন্যান্য মুহাদ্দিছীনে কেরাম হাদীছটি ছহীহ সনদে নকল করেছেন।
 হাদিস থেকে বুজা যায় রাসুল (সা) নামাজে দু সময় নিরব থাকতেন। প্রথম নিরবতা তাকবীরে তাহরীমার সময় তখন তিনি সানা পড়তেন আর ২য় নিরবতা সুরা ফাতিহা শেষ করার পর।  সময় তিনি আমিন বলতেন। বুজা গেল আমীন তিনি নি:শব্দে বলতেন।
.
হাদিসটিতে কাতাদা প্রথমতত : বলেছিলেন ২য় নিরবতা হতো কেরাত শেষ করার পর। পরে ব্যাখ্যা করে বুজিয়ে দেন যেকেরাত শেষ করা মানে সুরা ফাতেহার কেরাত শেষ করা। আর সম্পূর্ণ কেরাত শেষ করার পর রাসুল () এতটুকু নিরব থাকতেন যাতে শ্বাস স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। এটা সামান্য নিরবতা হতো। আবু দাঊদ শরীফে (৭৭৯) কাতাদা (রহ) হতে সাঈদের সুত্রে ইয়াযীদ . এর বরননায় স্পস্ট উল্লেখ আছে ,:-
একটি সাকতা হতো তাকবীরে তাহরীমার পরআরেটি সাকতা হতো ওলায যোয়াল্লিন বলার পর।
দারাকুতনি (রহ)  ইবনে উলাইয়া থেকেতিনি ইউনুস ইবনে উবায়দার সুত্রে হাসান বসরী থেকে অনুরুপ বরননা করেছেন।
[( 
মুসনাদে আহমাদ /২৩(২০৫৩০)]
.
ইবনে হিব্বান তার সহিহ গ্রন্থে  হাদিসের উপর শিরোনাম দিয়েছেন :-
” 
সুরা ফাতিহা শেষ করার পর ২য় বার নিরব থাকা মুস্তাহাব
.
আল্লামা ইবনুল কাইয়্যুম (রহ) যার তাহকিক  গবেষনার উপর লা মাযহাবীদেরও বেশ আস্থা আছেতিনি তার যাদুল মায়াদ গ্রন্থে লিখেন >>>
” 
সামুরা (রা) উবাইয়্যা ইবনে কা (রা)  ইমরান ইবনে হোসাইন (রা) হতে সহিহ সনদে দুই সাকতার হাদিসটি বরনিত হয়েছে।
এই হাদিস আবু হাতিম কে [ইবনে হিব্বান ] হিসেবে তার সহিহ ” গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। আর সামুরা (রা) হলেন ইবনে জুনদুব।  থেকে স্পষ্ট যে সামুরা (রা) দুই সাকতার হাদিসটি বরননা কারীদের একজন। তিনি তার হাদিসে বলেছেন আমি রাসুল (সা) হতে দুটি সাকতার কথা স্বরন রেখেছি। একটি হলো তিনি যখন তাকবির দিতেন আর আরেকটি হলো তিনি যখন ওয়ালায যোয়াল্লিন ” শেষ করতেন।
কোন কোন বরননায় হাদিসটি এভাবে উদ্ধৃত হয়েছে যেতিনি যখন কিরাত শেষ করতেন তখন নিরব থাকতেন। এই বরননাটি অস্পষ্ট। প্রথম বরননাটি ব্যাখ্যা সম্বলিত এবং সুস্পষ্ট। ( যাদুল মায়াদ,, ১ম খন্ড৭৯ প্রিষ্ঠা)
:
:

অবশেষে কোরআন থেকে ১১ নাম্বার দলিল

আতা ইবনে রাবাহ বলেন- ﺁﻣﻴﻦ ﺩﻋﺎﺀ
আমীন হচ্ছে দুআ।
[
সহীহ বুখারী /১০৭]
আর আমীন অর্থ হল- ইয়া আল্লাহ আমার দুআ কবুল করুন!
[
লুগাতুল হাদীসের নির্ভরযোগ্য গ্রন্থ মাজমাউল বিহারে-/২০৫তাফসীরে খাযেন-/৩০]
.
তা ছাড়া সূরা ইউনুসের ৮৮ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা হযরত মুসা . হারুন . এর দু বর্ণনা দিয়েছেন।হযরত মূসা . যখন দোয়া করতেন তখন হারুন .আমীম আমীম বলতেন।
[
তাসীরে দুররে মানসূর /৩১৫তাফসীরে ইবনে কাসীর /৩১তাফসীরে খাযেন /৩০৬]
আর হযরত মূসা . এর দোয়া এবং হারুন . এর আমীনউভয় টিকে আল্লাহ তায়ালা সূরা ইউনুসের ৮৯ নং আয়াতে সুস্পষ্ট ভাষায় দোয়া” বলেছেন। যা নিম্নে উল্লেখ করা হল-
ﻗَﺎﻝَ ﻗَﺪْ ﺃُﺟِﻴﺒَﺖ ﺩَّﻋْﻮَﺗُﻜُﻤَﺎ ﻓَﺎﺳْﺘَﻘِﻴﻤَﺎ ﻭَﻻَ ﺗَﺘَّﺒِﻌَﺂﻥِّ ﺳَﺒِﻴﻞَ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻻَ ﻳَﻌْﻠَﻤُﻮﻥَ
বললেনতোমাদের দোয়া মঞ্জুর হয়েছে। অতএব তোমরা দুজন অটল থাকো এবং তাদের পথে চলো না যারা অজ্ঞ।
[
সূরা ইউনুস ৮৯ নং আয়াত]
:
সুতরাং প্রমানিত হলো যে আমীন একটি দোয়া” আর দোয়া নীচু স্বুরে বলতে হয়। যেমন:- আল্লাহ তায়ালা বলেন-
ﺍﺩْﻋُﻮﺍْ ﺭَﺑَّﻜُﻢْ ﺗَﻀَﺮُّﻋًﺎ ﻭَﺧُﻔْﻴَﺔً ﺇِﻧَّﻪُ ﻻَ ﻳُﺤِﺐُّ ﺍﻟْﻤُﻌْﺘَﺪِﻳﻦ
নীচুস্বুরে ব্যাকুল হৃদয়ে তোমার প্রতিপালকের নিকট দু করো।
[
সূরা আল রাফ ৫৫ নং আয়াত]
:
:
:
a
 
উপরে উল্লেখিত ১১টি দলিল দ্বারা সুস্পষ্ট ভাষায় প্রমানিত হল- আমিন আস্তে বলা সুন্নত কিন্তু যদি কেউ জোরে বলে তাহলে জায়েজ আছে কোন সমস্যা নেই।
অতএব এখন আপনার ব্যাপারসুন্নত পালন করবেন নাকি জায়েজ পালন করবেন.??????


No comments

Powered by Blogger.