Header Ads

Header ADS

অত্যাচার ২



প্রিয় বন্ধুরা! আমরা অবগত আছি তাবলীগ জামাতের চলমান সংকট সম্পর্কে। যে সংকট এখন মহাসংকটে রূপ নিয়েছে।
মাওলানা সাদ সাহেব নিজে ভুল করেছেন। আর ইবলিশী ভূমিকায় স্বীকার না করে আলেমদেরকে ভুল প্রমাণিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। আলেমরা তার ভ্রান্তিগুলো জনসম্মুখে পেশ করতেই তিনি ঘোষণা করলেন আলেমরা তাবলীগ বুঝেনা। আলেমরা যদি তাবলীগ নাই বুঝে তাহলে সাদ সাহেবের বাবার দাদাও তাবলীগ বুঝেননি। সাহেবের বাবার দাদা অর্থাৎ মাওলানা ইলিয়াস সাহেব রহ. তিনি নিজেও একজন বিখ্যাত আলেমেদ্বীন হিসাবে প্রসিদ্ধ ছিলেন। সাদ সাহেব একের পর এক বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে চলেছেন। তার মধ্যে অন্যতম মাদরাসায় খেদমত করে টাকা নেওয়াকে দেহ ব্যবসাকারীর উপার্জনের সাথে তুলনা করা। তিনি আরো বলেছেন- যারা মসজিদে নামায পড়িয়ে টাকা নেয় তাদের পিছনে নামায পড়লে নামায সহীহ হবেনা।
তিনি আরো বলেছেন যারা অতীতে এমন ইমামের পিছনে নামায পড়েছে তারা যেন অতীতের সকল নামায ক্বাযা পড়ে নেয়। অথচ দেশের প্রায় সকল মসজিদের ইমামরাই টাকা নিয়ে থাকেন।
তাহলে দেশের সকল মানুষের জন্য অতীতের সব নামায ক্বাযা করে নেয়া আবশ্যাক। এই হলো সাদ সাহেবের মাথা খারাবী কথা। এখন অন্ধ বিশ্বাসী সাদপন্থীদের উচিত হলো সারা জীবনের নামায ক্বাযা করে নেওয়া। আর নয়তো এরকম উল্টাপাল্টা কথাগুলো বিশ্বাস করা থেকে বিরত থাকা। আল্লাহ পাক সাদ সাহেব এবং তার অনুসারীদেরকে হেদায়েত দান করুক এবং আমাদের সবাইকে আল্লাহ তায়ালা কবুল করে নিন। আমিন




১ ডিসেম্বর ২০১৮, যখন এতাআতিরা চতুর্দিক থেকে হামলা চালাচ্ছে তখন আমি দিশেহারা হয়ে ঘুরপাক খাচ্ছিলাম। কোন দিকে যাবো? যেদিকে তাকাই সেদিকেই এতাআতীদের দেখতে পাই। আমার পাশে আমার সাথীরা কেউ ছিলনা। সবাইকে হারিয়ে ফেলেছিলাম। হঠাৎ দেখতে পেলাম কিছু ছাত্র টঙ্গী ময়দানের হেফজখানা ও মক্তবের পাশে একটি গোসলাখানায় অবস্থান নেওয়ার জন্য দৌঁড়াচ্ছে। আমিও তাদের সাথে দৌঁড়ে গোসলখানায় অবস্থান করলাম। আমার সাথে ছিল দুইজন মুরব্বী ও চারজন অন্য মাদরাসার ছাত্র। আমি দরজা লাগিয়ে দিলাম। কিছুক্ষণ পর এক এতাআতী দরজার সামনে এসে বলল, “তোরা এখনি বের হয়ে যা, নাহলে তোদের জিন্দা কবর দিবো, তোদের খুন করব। খুব কঠিনভাবে হুংকার দিচ্ছিল।
আমরা দরজা খুলিনি। সবাই মিলে বললাম- এখানে দুইজন মুরব্বী আছে। আমাদের ময়দান থেকে বের হওয়ার সুযোগ করে দিন। তারা হুংকার দিয়ে বলল, তোদের বের করে দিবো? তোদের চামড়া তুলে ফেলব। তাড়াতাড়ি খুল? তবু দরজা খুলিনি। এরপর তারা দরজায় আঘাত করে ভেঙ্গে ফেলেছে। দরজাটা ছিল কাঠ দিয়ে তৈরি। দরজা খুলেই আর কিছু না বলে বাশ দিয়ে পিটাতে শুরু করে দিয়েছে। আমি তাদের বলেছি। আমার গায়ে হাত তুলবেনা। তারা কয়েকজন মিলে আমাকে মেরেছে।
এরপর আমি দৌঁড়ে হেফজ খানার সামনে গেলাম। সেখানেও কয়েকজন আমার গায়ে, দুই পাঁয়ে, হাতে ও পিঠে পিটিয়েছে। তাদের মার সহ্য করতে না পেরে মাদরাসার সামনে দিয়ে দৌঁড় দিয়েছি। তখন দুইপাশে লাইন করে দাঁড়িয়ে ছিল প্রায় তিনশত লোক। আর ছাত্রদের বলছিল, ‘তোরা মাঝে দিয়ে দৌঁড় দিয়ে পালিয়ে যা। আর তারা দু’পাশ থেকে লাঠি দিয়ে প্রচুর পরিমাণে মারছিল। যেই ছাত্র বা শিক্ষক দৌঁড় দিয়েছে, তাদের বেশিরভাগের মাথা ফেটেছে। তাদের টার্গেট ছিল শুধু মাথায় আঘাত করা। তখন আমার গায়ে পাঁচটি আঘাত লেগেছে। যখন আমার পায়ে আঘাত লেগেছে তখন আমি আর দৌঁড়াতে পারছিলাম না। এরপর গেলাম সাদপন্থী এক মুরব্বীর কাছে, মুরব্বীও ছিলেন তাদের একজন। আমি বললাম, ‘আমি আপনাদের লোক, আমাকে বাঁচান। মুরব্বী আমাকে ধমক দিয়ে বলল, ময়দান দখল করতে আইছোছ?
এরপর সেই মুরব্বী বলল আমার পাশে বস, এরপর দেখতে পেলাম তাদের হিং¯্র আচরণ। স্বচক্ষে দেখতে পেলাম কিভাবে তারা ছাত্র শিক্ষক ও মুরব্বীদের রক্তাক্ত করছে। মুরব্বীর পাশে দাঁড়িয়ে দীর্ঘ সময় তাদের ভয়াবহতার দৃশ্য দেখেছি।
কিছুক্ষণ পর দেখতে পেলাম আমাদের জামাতের এক ছাত্র মুহা. মাকসুদকে রক্তাক্ত অবস্থায় দৌঁড়াতে। তার মাথা ফেটে গেছে। হাতে প্রচুর আঘাত পেয়েছে। তবুও তারা তাকে মারছে। মাকসুদ ভাই কান্না করছে। অশ্রুফোঁটা তার গাল বেয়ে টপকে টপকে পড়ছে। কিন্তু তাদের একটুও মায়া হচ্ছেনা। আমি দেখে আমার কলিজা ছিঁড়ে যাওয়ার উপক্রম। কিন্তু আমার কিছুই করার ছিল না। দু’চোখ দিয়ে দেখছিলাম আর নীরবে কাঁদছিলাম। আর মাঝে মাঝে বলছিলাম হে আল্লাহ, তুমি তাদের হেদায়েত দান করো। হেদায়েত না থাকলে তাদের ধ্বংস করো।
এরপর এক আলেমকে লাথি দিয়ে জমিনে ফেলে দিয়েছে আর বলছে, তোদের জানে মেরে ফেলবো। সেই আলেম বলছিল, আমাকে মাফ করে দেন। এরপর তারা বলল, কান ধর, নাকে খত দে। সেই আলেমটি নাকে খত দিতে চায়নি। কিন্তু তারা বাধ্য করেছে। এরপর সেই আলেম কান্নামাখা চোখ নিয়ে নাকে খত দিয়েছে। সেই আলেমের কাছ থেকে স্বীকৃতি নিয়েছে সাদ আমির। এই হল তাদের আসল চরিত্র। আলেমদের অনুসারী এক মুরব্বীকে বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে জমিনে ফেলে দিয়েছে। সেই মুরব্বীর কাপড় খুলে গিয়েছে। তবুও তারা মারপিট থামায়নি। উলঙ্গ অবস্থায় সেই মুরব্বীকে দৌঁড়াতে দেখেছি।
দীর্ঘসময় তাদের এই হিং¯্র আচরণ দেখছিলাম আর নীরবে কাঁদছিলাম। প্রায় এক ঘণ্টা হয়েছে এরপর দুইজন পুলিশ এসেছে। তারা পুলিশের সামনেও ছাত্র, আলেম ওলামা এবং নিরীহ মুরব্বীদের গায়ে হাত তুলেছে, রক্তাক্ত করেছে। পুলিশরা কিছুই বলেনি।


একজন আলেম তাকে দেখে মনে হয়েছে কোন মাদরাসার মুহতামিম বা মুহাদ্দিস হবে। সেই উস্তাদকে বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। মাথা থেকে রক্ত ঝরছে। বুক পর্যন্ত রক্তাক্ত হয়ে গেছে। এভাবে অনেক ভয়াবহতা দেখেছি। তাদের এই হিং¯্র আচরণ প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে স্বচক্ষে দেখেছি। যেসব আমার পক্ষে উল্লেখ করা সম্ভব না। একটি পশুকেও কেউ এভাবে মারে না।
সবচেয়ে দুঃখজনক কথা হলো তাদের হিং¯্র আচরণ ও মারধর থেকে ময়দানের মাদরাসার ছাত্র ছোট ছোট বাচ্চারা পর্যন্ত রেহাই পায়নি। তাদেরকেও প্রচুর মেরেছে। এরপর তারা মারপিট কিছুটা কমিয়ে দিয়েছে। আমি তাদের সাথে অনেক কথাও বলেছি। দীর্ঘসময় হেঁটেছি। তারা অনেক লোককে ফোন করে বলেছে, আমরা ময়দান বিজয় করেছি। আলেমদের তাড়িয়ে দিয়েছি। আমরা গাজি। আমরা এখন কাকরাইল দখল করবো। মাও. জুবাইর ও মাও. রবিউল এই দুই শয়তানকে আচ্ছমত পিটাবো। এই হলো তাদের ভাষা আরও অনেক গালাগালি করেছে যা আমার কলমে আসছে না।
এরপর আমি তাদের সাথে মাঠের মধ্যখান দিয়ে হাঁটা শুরু করলাম। পথের মধ্যে দেখতে পেলাম কয়েকজন তালিবে ইলমকে ধরে মারছে ও গায়ের জামা খুলে ফেলেছে। কান ধরতে বলেছে, কান ধরে উঠছে ও বসছে। আমি এগুলো দেখে আর সহ্য করতে পারছিলাম না। এরপর মাদানীনগর মাদরাসার যেখানে থাকার জায়গা ছিল সেখানে আসলাম। অযু করে তাদের সাথে নামাজের জন্য দাঁড়ালাম। ঠিক এই মুহূর্তে এক তালিবে ইলম ভাই তার চশমা নেওয়ার জন্য এসেছে। সে বলেছে আমি চোখে কিছুই দেখছিনা। ভাই দয়া করে চশমা আনার সুযোগ দিন। তখন ঐ এলাকার কিছু ছেলে এসে কোন কথা না শুনে সেই তালিবে ইলমের গলা টিপে ধরল এবং বলল এখন থেকে পালা। সেই ছেলেটিকে আর চশমা দেওয়া হলনা। এরপর আমি তাদের সাথে সুন্নত পড়ে তাদের যে আমীর সে নামাজ পড়ালো। এরপ্র আমি তাদের সাথে নামাজ পড়ে বাটা গেটের দিকে হাঁটা শুরু করলাম। গিয়ে দেখি তারা তালিবে ইলম ভাইদের মারছে আর বের করছে। এরপর আমি আব্দুল্লাহপুর গেট দিয়ে বের হয়ে বর্বর এতাআতীদের আক্রমণ থেকে নিজেকে হেফাজত করি।



No comments

Powered by Blogger.